মানবমস্তিষ্ক ভীষণ জটিল। এই মস্তিষ্ক মানুষকে চাঁদে নিয়ে গেছে, পিরামিড তৈরি করেছে, জটিল রোগের প্রতিষেধক তৈরি করেছে…এবং পাঁচ থেকে ছয় মিনিট পরপর ফেসবুকে ঢুঁ মারতেও বলছে। গুগলে বাংলায় ‘মনোযোগ’ শব্দটি লিখলে বেশ কয়েকটি সাজেশন চলে আসে। সেগুলোর মধ্যে প্রথম তিনটি হলো: ১. মনোযোগ ধরে রাখার উপায়, ২. মনোযোগী হওয়ার উপায় এবং ৩. মনোযোগ দিয়ে পড়ার উপায়। বুঝতেই পারছেন, এই ‘সামাজিক’তার সময়ে মনোযোগ বিয়োগ নিয়ে সবার উদ্বিগ্নতা বেড়ে গেছে হাজার গুণ; বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে তা প্রকট। মনোযোগ বাড়াতে কী করা যায়? শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা ও গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য ঘেঁটে যা পাওয়া গেল, পড়ুন এখানে।
ধ্যান (মেডিটেশন) করুন
ধ্যান বা মেডিটেশনের মাধ্যমে মনকে প্রশিক্ষিত করা হয়। আমাদের মন একসঙ্গে অনেক কিছু চিন্তা করতে থাকে। ধ্যানের মাধ্যমে একটি বিষয়ে মনোযোগ দেওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়।
একসঙ্গে একাধিক কাজ নয়
গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজের সময় ফেসবুক, ই-মেইল বা ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার বন্ধ রাখুন। আমাদের মস্তিষ্ক একসঙ্গে একাধিক কাজ করার জন্য তৈরি হয়নি।
শারীরিক পরিশ্রম
ব্যায়াম, হাঁটাচলা বা দৌড়ঝাঁপ শরীরের জন্য ভালো, এটা আপনি জানেন। তবে এটাও মনে রাখুন, মস্তিষ্কও আপনার শরীরের অংশ। ফলে, শারীরিক পরিশ্রম মস্তিষ্ক সুস্থ রাখার জন্যও জরুরি।
প্রকৃতির কাছে যান
সবুজ একটা বৃক্ষ দেখলে মস্তিষ্কে ইতিবাচক বার্তা যায়। তাই এটা সহজেই অনুমেয় যে সাতসকালে সবুজের মধ্যে হাঁটাহাঁটি কতটা উপকারী। এমনকি প্রকৃতির ছবি দেখলেও চোখ ও মস্তিষ্ক আরাম পায়।
বিরতি নিন
একটানা কোনো কাজ করতে করতে বিরক্তি এসে গেলে বিরতি নিন। একটু ঘুরে আসুন, গান শুনুন, আড্ডা দিন। এমনকি দুপুরে ‘পাওয়ার ন্যাপ’ নিলেও মনোযোগ আরও বেড়ে যায়।
সহজ দিয়ে শুরু
যেকোনো কাজের বেলায়, বিশেষ করে পড়াশোনার সময় সহজ বিষয় দিয়ে শুরু করুন। একটা গতি চলে এলে কঠিন বিষয়েও মনোযোগ দেওয়া সহজ হয়ে যাবে।
পরিমিত ঘুমান
কম ঘুম আমাদের মনোযোগে বিরাট অন্তরায়। আবার বেশি ঘুমও বড় ক্ষতি করে ফেলে। তাই পর্যাপ্ত ঘুম এবং ঘুমের জন্য শারীরিক শ্রম জরুরি।
লিখে রাখুন
ভুলে যাওয়ার সমস্যা ইদানীং প্রায় সবাইকে ভোগাচ্ছে। তাই কোনো কিছু শোনার সঙ্গে সঙ্গে বা পড়ার পর লিখে ফেললে মনোযোগ অন্য কিছুতে যাওয়ার আশঙ্কা কম থাকে।
মন দিয়ে শুনুন
কেউ কথা বলার সময় মন দিয়ে শুনুন। মাঝখানে কিছু বলতে গেলে মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটে। আর অন্যের কথা মন দিয়ে শোনা স্বাভাবিক শিষ্টাচারের মধ্যেও পড়ে।
ভার্চ্যুয়াল দুনিয়ার বাইরে
ইন্টারনেট ব্যবহারের নির্দিষ্ট কিছু সময় ঠিক করে নিন। এটা এক দিনে হবে না, অভ্যাস করুন একটু একটু করে। ইন্টারনেটের বাইরেও পৃথিবী যে বৈচিত্র্যময়, এটা আগে বিশ্বাস করতে হবে।