বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন চলচ্চিত্র শিল্পীরা। আজ রোববার সকালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের সামনের রাস্তায় মানববন্ধনে দায়ী ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তির দাবি করেন তাঁরা। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির উদ্যোগে এই আয়োজনে চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি ও শিল্পী সমিতি ছাড়া চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংগঠনের সদস্যরা অংশ নেন।
মানববন্ধন শেষে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, ‘আমরা একটা কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই, ভাস্কর্য আর মূর্তি এক নয়—এটা সবাইকে বুঝতে হবে। শ্রদ্ধার প্রতীক হলো ভাস্কর্য আর পূজা–অর্চনার প্রতীক মূর্তি। শ্রদ্ধা ও সম্মানের প্রতীক ভাস্কর্য একটি দেশ ও জাতির অনন্য গৌরবময় অহংকার। কাজেই যাঁরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের বিরোধিতা করবেন, আমরা তাঁদের প্রতিরোধ করব। আমরা চাই সরকার তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। এর আগেও দেশে অনেক ভাস্কর্য হয়েছে, তখন কিন্তু এসব নিয়ে এত কথা হয়নি। তাহলে হঠাৎ করে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে এমনটা কেন হচ্ছে, কারাই বা এমনটা করছে— তার মানে কোনো ষড়যন্ত্র চলছে। হঠাৎ করে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের সাহস কারা দেখিয়েছে? এটা সরকারকে অস্থিতিশীল করার একটা চেষ্টাও মনে হচ্ছে। শুধু তা–ই নয়, এটা একরকম ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টার মতো। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে এসব কোনোভাবেই কাম্য নয়।’
মানববন্ধনে অংশগ্রহণ শেষে সংগীতশিল্পী এস ডি রুবেল বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার হিসেবে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যকে দলমত-নির্বিশেষে সবারই সম্মান জানানো উচিত। এমন সম্মানীয় একজন ব্যক্তিকে যেভাবে অসম্মান করা হচ্ছে, তার ঘৃণা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই।’
কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙাসহ দেশের নানা স্থানে ভাস্কর্য নিয়ে কেউ যেন কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি না করে, সে ব্যাপারে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতারা। এফডিসির সামনের রাস্তায় মানববন্ধনে অংশ নেন মৌসুমী, ওমর সানী, মুশফিকুর রহমান গুলজার, এস ডি রুবেল, গোলাম কিবরিয়া, খোরশেদ আলম, অপূর্ব রানা প্রমুখ।
এদিকে এফডিসির সামনের রাস্তায় মানববন্ধনে অংশ না নিলেও মঞ্চ, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র, সংগীত জগতের শিল্পীরা ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে নিজেদের ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।